অপরাধী

অপরাধী
————————–

একটা সময় তোরে আমি সবই ভাবিতাম
তোরে মন পিঞ্জরায় যতন করে
আগলাইয়া রাখতাম
তোর হাসি মুখের ছবি দেইখা
দুঃখ পুষাইতাম,
তুই কাঁদলে পরে কেমন করে
হারাইয়া যাইতাম(x2)

ওরে মনের খাঁচায় যতন কইরা
দিলাম তোরে ঠাঁই,
এখন তোর মনেতেই আমার জন্য
কোন জায়গা নাই
ওরে আদর কইরা পিঞ্জরাতে
পুষলাম পাখি-রে
তুই যা রে যা উইড়া যা রে
অন্য খাঁচাতে

ও মাইয়া রে মাইয়া রে তুই অপরাধী রে
আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা
দে ফিরাইয়া দে
আমার অনুভূতির সাথে খেলার
অধিকার দিল কে
মাইয়া তুই বড় অপরাধী
তোর ক্ষমা নাই রে..

তোরে স্কুল পলাইয়া একটা নজর
দেখিতে যাইতাম
আমি টিফিনের সব টাকা জমায়
আবেগ কিনতাম
অরে রাইত এর পর রাইত জাগিয়া
গান লিখিতাম
আমার সেই গানেরও সুরে তোরে
খুঁজিয়া লইতাম(x2)

অহন একলা একা সময় গুলা
কাটাই কেমনে
এত ভালোবাসার পরেও আমার
কম কি ছিল রে ?
রোজ রাইতে আমায় জোনাক পোকা
কানে কানে কয়
তুই দেইখা লও রে ত্রিভুবনে
কেউ তো করো নয়

ও মাইয়া রে মাইয়া রে তুই অপরাধী রে
আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা
দে ফিরাইয়া দে
আমার অনুভূতির সাথে খেলার
অধিকার দিল কে
মাইয়া তুই বড় অপরাধী
তোর ক্ষমা নাই রে..
রে রে রে, রেরে রে রে রা রি রে……

তোর নামের পাশে সবুজ বাতি
আর তো জ্বলে না
এখন রাত্রি জুইড়া কেউ তো আর
মায়া লাগায় না
কারো হাসি মুখের ছবি দেইখ্যা
ঘুম আর ভাঙ্গে না
কেউ আর flexiload এর দোকানটাতেও
ভিড় জমায় না(x2)

এখন তারার মতো জ্বলে নেভে কষ্টগুলা রে
আমি গিটার এর সুর সাথে লইয়া
ভালোই আছি রে
রোজ রাইতে আমায় জোনাক পোকা
কানে কানে কয়
দেইখা লও রে ত্রিভুবনে
কেউ তো করো নয়

ও মাইয়া রে মাইয়া রে তুই অপরাধী রে
আমার যত্নে গড়া ভালোবাসা
দে ফিরাইয়া দে
আমার অনুভূতির সাথে খেলার
অধিকার দিল কে
মাইয়া তুই বড় অপরাধী
তোর ক্ষমা নাই রে.. (x2)

PSC Scholarship Result 2017-2018 Primary Education Board

n the year of 2017 Primary School Certificate (PSC) exam total of 1, 05,673 students got GPA-5. There are total 24, 15,341 students attended the PSC exam. And 13, 17,268 girls & 10, 98,073 boys passed the examination though 65,778 failed. Primary School Certificate (PSC) & Ebtedeyi result was published 31st December 2017. Most of the students got good result. Now the majority of the students are waiting for primary scholarship result 2018.

Primary Scholarship Result 2018 Download
PSC Scholarship Result 2017 Dhaka board | Primary Scholarship Result 2017 Chittagong Board
PSC Scholarship Result 2017 Dinajpur Board | PSC Scholarship Result 2017 Comilla Board
PSC Scholarship Result 2017 Jessore Board | PSC Scholarship Result 2017 Barisal Board
PSC Scholarship Result 2017 Rajshahi Board | Primary School Certificate (PSC) Scholarship Result 2017 Sylhet Board

কেউ কথা রাখেনি

কেউ কথা রাখেনি
——-সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়———

কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি
ছেলেবেলায় এক বোষ্টুমী তার আগমনী গান হঠাৎ থামিয়ে বলেছিল
শুক্লা দ্বাদশীর দিন অন্তরাটুকু শুনিয়ে যাবে
তারপর কত চন্দ্রভূক অমাবস্যা চলে গেলো, কিন্তু সেই বোষ্টুমী
আর এলোনা
পঁচিশ বছর প্রতিক্ষায় আছি।

মামা বাড়ির মাঝি নাদের আলী বলেছিল, বড় হও দাদাঠাকুর
তোমাকে আমি তিন প্রহরের বিল দেখাতে নিয়ে যাবো
সেখানে পদ্মফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমর
খেলা করে!
নাদের আলী, আমি আর কত বড় হবো? আমার মাথা এ ঘরের ছাদ
ফুঁড়ে আকাশ স্পর্শ করলে তারপর তুমি আমায়
তিন প্রহরের বিল দেখাবে?

একটাও রয়্যাল গুলি কিনতে পারিনি কখনো
লাঠি-লজেন্স দেখিয়ে দেখিয়ে চুষেছে লস্করবাড়ির ছেলেরা
ভিখারীর মতন চৌধুরীদের গেটে দাঁড়িয়ে দেখেছি
ভিতরে রাস-উৎসব
অবিরল রঙের ধারার মধ্যে সুবর্ণ কঙ্কণ পরা ফর্সা রমণীরা
কত রকম আমোদে হেসেছে
আমার দিকে তারা ফিরেও চায়নি!
বাবা আমার কাঁধ ছুঁয়ে বলেছিলেন, দেখিস, একদিন, আমরাও…
বাবা এখন অন্ধ, আমাদের দেখা হয়নি কিছুই
সেই রয়্যাল গুলি, সেই লাঠি-লজেন্স, সেই রাস-উৎসব
আমায় কেউ ফিরিয়ে দেবেনা!

বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বরুণা বলেছিল,
যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে
সেদিন আমার বুকেও এ-রকম আতরের গন্ধ হবে!
ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠেয়ে প্রাণ নিয়েছি
দূরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়
বিশ্বসংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীল পদ্ম
তবু কথা রাখেনি বরুণা, এখন তার বুকে শুধুই মাংসের গন্ধ
এখনো সে যে-কোনো নারী।
কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটল, কেউ কথা রাখে না!

দুই বিঘা জমি

দুই বিঘা জমি

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই আর সবই গেছে ঋণে।
বাবু বলিলেন, “বুঝেছ উপেন, এ জমি লইব কিনে।’
কহিলাম আমি, “তুমি ভূস্বামী, ভূমির অন্ত নাই।
চেয়ে দেখো মোর আছে বড়ো-জোর মরিবার মতো ঠাঁই।’
শুনি রাজা কহে, “বাপু, জানো তো হে, করেছি বাগানখান
পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দিঘে সমান হইবে টানা–
ওটা দিতে হবে।’ কহিলাম তবে বক্ষে জুড়িয়া পাণি
সজল চক্ষে, “করুণ বক্ষে গরিবের ভিটেখানি।
সপ্ত পুরুষ যেথায় মানুষ সে মাটি সোনার বাড়া,
দৈন্যের দায়ে বেচিব সে মায়ে এমনি লক্ষ্মীছাড়া!’
আঁখি করি লাল রাজা ক্ষণকাল রহিল মৌনভাবে,
কহিলেন শেষে ক্রূর হাসি হেসে, “আচ্ছা, সে দেখা যাবে।’
পরে মাস দেড়ে ভিটে মাটি ছেড়ে বাহির হইনু পথে–
করিল ডিক্রি, সকলই বিক্রি মিথ্যা দেনার খতে।
এ জগতে, হায়, সেই বেশি চায় আছে যার ভূরি ভূরি–
রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।
মনে ভাবিলাম মোরে ভগবান রাখিবে না মোহগর্তে,
তাই লিখি দিল বিশ্বনিখিল দু বিঘার পরিবর্তে।
সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে হইয়া সাধুর শিষ্য
কত হেরিলাম মনোহর ধাম, কত মনোরম দৃশ্য!
ভূধরে সাগরে বিজনে নগরে যখন যেখানে ভ্রমি
তবু নিশিদিনে ভুলিতে পারি নে সেই দুই বিঘা জমি।
হাটে মাঠে বাটে এই মতো কাটে বছর পনেরো-ষোলো–
একদিন শেষে ফিরিবারে দেশে বড়ই বাসনা হল।
নমোনমো নম সুন্দরী মম জননী বঙ্গভূমি!
গঙ্গার তীর স্নিগ্ধ সমীর, জীবন জুড়ালে তুমি।
অবারিত মাঠ, গগনললাট চুমে তব পদধূলি,
ছায়াসুনিবিড় শান্তির নীড় ছোটো ছোটো গ্রামগুলি।
পল্লবঘন আম্রকানন রাখালের খেলাগেহ,
স্তব্ধ অতল দিঘি কালোজল– নিশীথশীতল স্নেহ।
বুকভরা মধু বঙ্গের বধূ জল লয়ে যায় ঘরে–
মা বলিতে প্রাণ করে আনচান, চোখে আসে জল ভরে।
দুই দিন পরে দ্বিতীয় প্রহরে প্রবেশিনু নিজগ্রামে–
কুমোরের বাড়ি দক্ষিণে ছাড়ি রথতলা করি বামে,
রাখি হাটখোলা, নন্দীর গোলা, মন্দির করি পাছে
তৃষাতুর শেষে পঁহুছিনু এসে আমার বাড়ির কাছে।
ধিক্ ধিক্ ওরে, শতধিক্ তোরে, নিলাজ কুলটা ভূমি!
যখনি যাহার তখনি তাহার, এই কি জননী তুমি!
সে কি মনে হবে একদিন যবে ছিলে দরিদ্রমাতা
আঁচল ভরিয়া রাখিতে ধরিয়া ফল ফুল শাক পাতা!
আজ কোন্ রীতে কারে ভুলাইতে ধরেছ বিলাসবেশ–
পাঁচরঙা পাতা অঞ্চলে গাঁথা, পুষ্পে খচিত কেশ!
আমি তোর লাগি ফিরেছি বিবাগি গৃহহারা সুখহীন–
তুই হেথা বসি ওরে রাক্ষসী, হাসিয়া কাটাস দিন!
ধনীর আদরে গরব না ধরে ! এতই হয়েছ ভিন্ন
কোনোখানে লেশ নাহি অবশেষ সেদিনের কোনো চিহ্ন!
কল্যাণময়ী ছিলে তুমি অয়ি, ক্ষুধাহরা সুধারাশি!
যত হাসো আজ যত করো সাজ ছিলে দেবী, হলে দাসী।
বিদীর্ণ হিয়া ফিরিয়া ফিরিয়া চারি দিকে চেয়ে দেখি–
প্রাচীরের কাছে এখনো যে আছে, সেই আমগাছ একি!
বসি তার তলে নয়নের জলে শান্ত হইল ব্যথা,
একে একে মনে উদিল স্মরণে বালক-কালের কথা।
সেই মনে পড়ে জ্যৈষ্ঠের ঝড়ে রাত্রে নাহিকো ঘুম,
অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি আম কুড়াবার ধুম।
সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর, পাঠশালা-পলায়ন–
ভাবিলাম হায় আর কি কোথায় ফিরে পাব সে জীবন!
সহসা বাতাস ফেলি গেল শ্বাস শাখা দুলাইয়া গাছে,
দুটি পাকা ফল লভিল ভূতল আমার কোলের কাছে।
ভাবিলাম মনে বুঝি এতখনে আমারে চিনিল মাতা,
স্নেহের সে দানে বহু সম্মানে বারেক ঠেকানু মাথা।
হেনকালে হায় যমদূত-প্রায় কোথা হতে এল মালী,
ঝুঁটি-বাঁধা উড়ে সপ্তম সুরে পাড়িতে লাগিল গালি।
কহিলাম তবে, “আমি তো নীরবে দিয়েছি আমার সব–
দুটি ফল তার করি অধিকার, এত তারি কলরব!’
চিনিল না মোরে, নিয়ে গেল ধরে কাঁধে তুলি লাঠিগাছ–
বাবু ছিপ হাতে পারিষদ-সাথে ধরিতেছিলেন মাছ।
শুনি বিবরণ ক্রোধে তিনি কন, “মারিয়া করিব খুন!’
বাবু যত বলে পারিষদ-দলে বলে তার শতগুণ।
আমি কহিলাম, “শুধু দুটি আম ভিখ মাগি মহাশয়!’
বাবু কহে হেসে, “বেটা সাধুবেশে পাকা চোর অতিশয়।’
আমি শুনে হাসি আঁখিজলে ভাসি, এই ছিল মোর ঘটে–
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ, আমি আজ চোর বটে!

ব্যাংকারদের স্বপ্নের পে-স্কেল আসবে

ব্যাংকারদের স্বপ্নের পে-স্কেল আসবে কবে?এটি এখন শত কোটি টাকার প্রশ্ন।তবে প্রশ্ন যত মূল্যবানই হোক এর কোন সদুত্তরে নেই কারো কাছে।সরকার অনেক কিছু দেবে দেবে করে কিছুই দিল না ব্যাংকারদের।পে-কমিশন গঠনের কথা শুনলাম সেটাও কবে নাগাদ গঠিত হবে সেটা কেউ বলতে পারে না।

পথ শিশুদের জন্য কিছু করা

IMG_20130806_150624সত্যিই কারো জন্য কিছু করা কতটা যে কঠিন কাজ তা আমি বুঝলাম পথ শিশুদের জন্য কিছু করতে যেয়ে।তবে অনেকের সহযোগিতা আমাকে আশান্বিত করেছে।এই উদ্যোগটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য দরকার সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা।তবে এই উদ্যোগটাকে সফল ভাবে সমাপ্ত করার জন্য সবাইকে অশেষ ধন্যবাদ আর ভালোবাসা।সবাই প্রতি রইল কৃতজ্ঞা।চেষ্টা কখনও যে বৃথা যায় না তা আমি বুঝল যেকোন উদ্যোগই সফলভাবে সমাপ্ত করা জন্য চাই দৃঢ়চেতা মনোভাব আর কাজের প্রতি আন্তরিকতা।এই দুইটা জিনিসের সংযোগ যদি আপনে ঘটাতে পারেন তাহলে আপনার সফলতা অণিবার্য।এই কাজটা সফলভাবে করার পর আমাদের সাহস অনেক বেড়ে গেছে ।এখন আমরা যেকোন উদ্যোগই সফলভাবে করতে পারব।
IMG_20130806_150551

IMG_20130806_150206

IMG_20130806_150158
আমাদের এই সফলভাবে এগিয়ে চলাটা যেন কোনদিনও শেষ না হয়।এই পথচলা শুরুটা যত অমসৃণই হোক কেন আমরা কখনও থেকে যাব না এই বিশ্বাস আমাদের আছে।

রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহকে লেখা চিঠি – তসলিমা নাসরিন


প্রিয় রুদ্র,
প্রযত্নেঃ আকাশ,
তুমি আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখতে বলেছিলে। তুমি কি এখন আকাশ জুরে থাকো? তুমি আকাশে উড়ে বেড়াও? তুলোর মতো, পাখির মতো? তুমি এই জগত্সংসার ছেড়ে আকাশে চলে গেছো। তুমি আসলে বেঁচেই গেছো রুদ্র। আচ্ছা, তোমার কি পাখি হয়ে উড়ে ফিরে আসতে ইচ্ছে করে না? তোমার সেই ইন্দিরা রোডের বাড়িতে, আবার সেই নীলক্ষেত, শাহবাগ, পরীবাগ, লালবাগ চষে বেড়াতে? ইচ্ছে তোমার হয় না এ আমি বিশ্বাস করি না, ইচ্ছে ঠিকই হয়, পারো না। অথচ এক সময় যা ইচ্ছে হতো তোমার তাই করতে। ইচ্ছে যদি হতো সারারাত না ঘুমিয়ে গল্প করতে – করতে। ইচ্ছে যদি হতো সারাদিন পথে পথে হাটতে – হাটতে। কে তোমাকে বাধা দিতো? জীবন তোমার হাতের মুঠোয় ছিলো। এই জীবন নিয়ে যেমন ইচ্ছে খেলেছো। আমার ভেবে অবাক লাগে, জীবন এখন তোমার হাতের মুঠোয় নেই। ওরা তোমাকে ট্রাকে উঠিয়ে মিঠেখালি রেখে এলো, তুমি প্রতিবাদ করতে পারোনি।

আচ্ছা, তোমার লালবাগের সেই প্রেমিকাটির খবর কি, দীর্ঘ বছর প্রেম করেছিলে তোমার যে নেলী খালার সাথে? তার উদ্দেশ্যে তোমার দিস্তা দিস্তা প্রেমের কবিতা দেখে আমি কি ভীষণ কেঁদেছিলাম একদিন ! তুমি আর কারো সঙ্গে প্রেম করছো, এ আমার সইতো না। কি অবুঝ বালিকা ছিলাম ! তাই কি? যেন আমাকেই তোমার ভালোবাসতে হবে। যেন আমরা দু’জন জন্মেছি দু’জনের জন্য। যেদিন ট্রাকে করে তোমাকে নিয়ে গেলো বাড়ি থেকে, আমার খুব দম বন্ধ লাগছিলো। ঢাকা শহরটিকে এতো ফাঁকা আর কখনো লাগেনি। বুকের মধ্যে আমার এতো হাহাকারও আর কখনো জমেনি। আমি ঢাকা ছেড়ে সেদিন চলে গিয়েছিলাম ময়মনসিংহে। আমার ঘরে তোমার বাক্সভর্তি চিঠিগুলো হাতে নিয়ে জন্মের কান্না কেঁদেছিলাম। আমাদের বিচ্ছেদ ছিলো চার বছরের। এতো বছর পরও তুমি কী গভীর করে বুকের মধ্যে রয়ে গিয়েছিলে ! সেদিন আমি টের পেয়েছি।
আমার বড়ো হাসি পায় দেখে, এখন তোমার শ’য়ে শ’য়ে বন্ধু বেরোচ্ছে। তারা তখন কোথায় ছিলো? যখন পয়সার অভাবে তুমি একটি সিঙ্গারা খেয়ে দুপুর কাটিয়েছো। আমি না হয় তোমার বন্ধু নই, তোমাকে ছেড়ে চলে এসেছিলাম বলে। এই যে এখন তোমার নামে মেলা হয়, তোমার চেনা এক আমিই বোধ হয় অনুপস্থিত থাকি মেলায়। যারা এখন রুদ্র রুদ্র বলে মাতম করে বুঝিনা তারা তখন কোথায় ছিলো?
শেষদিকে তুমি শিমুল নামের এক মেয়েকে ভালোবাসতে। বিয়ের কথাও হচ্ছিলো। আমাকে শিমুলের সব গল্প একদিন করলে। শুনে … তুমি বোঝোনি আমার খুব কষ্ট হচ্ছিলো। এই ভেবে যে, তুমি কি অনায়াসে প্রেম করছো ! তার গল্প শোনাচ্ছো ! ঠিক এইরকম অনুভব একসময় আমার জন্য ছিলো তোমার ! আজ আরেকজনের জন্য তোমার অস্থিরতা। নির্ঘুম রাত কাটাবার গল্প শুনে আমার কান্না পায় না বলো? তুমি শিমুলকে নিয়ে কি কি কবিতা লিখলে তা দিব্যি বলে গেলে ! আমাকে আবার জিজ্ঞেসও করলে, কেমন হয়েছে। আমি বললাম, খুব ভালো। শিমুল মেয়েটিকে আমি কোনোদিন দেখিনি, তুমি তাকে ভালোবাসো, যখন নিজেই বললে, তখন আমার কষ্টটাকে বুঝতে দেইনি। তোমাকে ছেড়ে চলে গেছি ঠিকই কিন্তু আর কাউকে ভালোবাসতে পারিনি। ভালোবাসা যে যাকে তাকে বিলোবার জিনিস নয়।
আকাশের সঙ্গে কতো কথা হয় রোজ ! কষ্টের কথা, সুখের কথা। একদিন আকাশভরা জোত্স্নায় গা ভেসে যাচ্ছিলো আমাদের। তুমি দু চারটি কষ্টের কথা বলে নিজের লেখা একটি গান শুনিয়েছিলে। “ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি দিও”। মংলায় বসে গানটি লিখেছিলে। মনে মনে তুমি কার চিঠি চেয়েছিলে? আমার? নেলী খালার? শিমুলের? অনেক দিন ইচ্ছে তোমাকে একটা চিঠি লিখি। একটা সময় ছিলো তোমাকে প্রতিদিন চিঠি লিখতাম। তুমিও লিখতে প্রতিদিন। সেবার আরমানিটোলার বাড়িতে বসে দিলে আকাশের ঠিকানা। তুমি পাবে তো এই চিঠি? জীবন এবং জগতের তৃষ্ণা তো মানুষের কখনো মেটে না, তবু মানুষ আর বাঁচে ক’দিন বলো? দিন তো ফুরোয়। আমার কি দিন ফুরোচ্ছে না? তুমি ভালো থেকো। আমি ভালো নেই।
ইতি,
সকাল
পুনশ্চঃ আমাকে সকাল বলে ডাকতে তুমি। কতোকাল ঐ ডাক শুনি না। তুমি কি আকাশ থেকে সকাল, আমার সকাল বলে মাঝে মধ্যে ডাকো? নাকি আমি ভুল শুনি?

বাতাসে লাশের গন্ধ – রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ


আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যূর নগ্ননৃত্য দেখি,
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে…
এ দেশ কি ভুলে গেছে সেই দু:স্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ।
এই রক্তমাখা মটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধেছিলো।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আধাঁর,
আজ তারা আলোহীন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায়।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জায় আরষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা – একি হবে নষ্ট জন্ম ?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল ?

জাতির পতাকা খামচে ধরেছে আজ পুরোনো শকুন।
বাতাশে লাশের গন্ধ
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দুলে মাংসের তুফান।
মাটিতে রক্তের দাগ –
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড়
এ চোখে ঘুম আসেনা। সারারাত আমার ঘুম আসেনা-
তন্দ্রার ভেতরে আমি শুনি ধর্ষিতার করুণ চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচা লাশ
মুন্ডহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বিভৎস্য শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে। আমি ঘুমুতে পারিনা, আমি
ঘুমুতে পারিনা…
রক্তের কাফনে মোড়া – কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা।
স্বাধীনতা, সে আমার – স্বজন, হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন –
স্বাধীনতা – আমার প্রিয় মানুষের রক্তে কেনা অমূল্য ফসল।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত জাতির পতাকা।

আমিও পারি

আমি চাইলেই কি আমার মরণ কামনা করতে পারি,
আমি চাইলেই কি অন্যের আকাশে লাটাই ঘুড়াতে পারি।
আমি চাইলেই কি অন্যের সাথে আমাকে জড়াতে পারি,
আমি চাইলেই কি তোমার ভূবনে নিজেকে নিসঃঙ্গ করে রাখতে পারি।
আমি চাইলেই কি আমার সাথে তোমাকে জড়াতে পারি,
আমি চাইলেই কি তোমার আাকাশে আমার স্বপ্ন উড়াতে পারি।
আমি চাইলেই কিন্তু সব পারি তোমার ভুবনে আমার যণ্ত্রনা ঢুকাতে পারি,
তোমার জীবনটা নষ্টামিতে ভরিয়ে দিতে পারি।
ভালোবাসার লাল ফিতায় তোমাকে চড়াতে পারি,
তোমার জীবনে অন্যের অস্তিত্ব নষ্ট করে দিতে পারি।
অন্যের সাথে নিজেকে জড়িয়ে অন্যকে কষ্ট দেওয়া কি,
নিজের সাথে প্রতারণা করা নয় কি?
আমি চাইলেই তো হাজারো পাপ করতে পারি।
উষার আকাশে হাজারটা ভূলের সাথে নিজেকে জড়াতে পারি,
এত ভূলের মাঝে নিজেকে শুধরে রাখাটা কি গর্বের নয়?
অন্যের মনোরজ্ঞনের জন্য নিজেকে অন্যের হাতে নষ্ট হতে দেওয়া কি?
তোমার কাছে ভালোবাসা মনে হলেও আমার কাছে নষ্টামি ছাড়া আর কিছু নয়।

যদি ভালবাসা পেতাম(২৫-১০-২০১৬)

যদি ভালবাসা পেতাম,তোমাকে আমার রাজ্যের রাণী বানাতাম
স্বপ্নের রাণী করে তোমাকে মনের রাজ্যের তাজমহলে রাখতাম।
যদি ভালবাসা পেতাম,তোমার স্বপ্নের রাজ্যে আমার স্বপ্ন বিলাতাম
যদি ভালবাসা পেতাম,তোমাকে তোমার মত করে সুখের রাজ্য দিতাম
যদি ভালবাসা পেতাম, যদি ভালবাসা পেতাম
যদি ভালবাসা পেতাম,সবটুকু সুখ মুড়িয়ে তোমাকে গহীন সাগরে ডুবাতাম
যদি ভালবাসা পেতাম,দু’দিঘী নলাকার বিলে সুখের মাতম ছড়াতাম
যদি ভালবাসা পেতাম,তোমার উন্মুক্ত ভুমিতে আনন্দ নৃত্যে মাততাম
যদি ভালবাসা পেতাম,আজ অবধি যত পাপের রাজ্যে ঘুরেছি
সব ছেড়ে অবোধ বালক হয়ে তোমার কোলে মরমী ঘুম দিতাম।
যদি ভালবাসা পেতাম, যদি ভালবাসা পেতাম
যদি ভালবাসা পেতাম,সব হারিয়েও তোমাকে আমার করে রাখতাম
প্রিয়তমা বিশ্বাস কর তোমার থেকে আর কাউকে বেশি আনন্দে রাখতাম না।
যদি ভালবাসা পেতাম, তোমাকে নিয়ে এক ঘুমে সারাটা জীবন কাটাতাম
যদি ভালবাসা পেতাম, তোমার স্বপ্ন ডানায় ভর করে অবাধ্য আকাশটাকে
হাতের মুঠোয় রাখতাম।
যদি ভালবাসা পেতাম, সত্যি বলছি ভালাবাসটাই তোমায় দিতাম
তোমার আকাশে চাঁদের আলোকছটা আমার আকাশে খই
তুমি ভাল থেকো আমি ভাল আছি সই।

(যদি কারো ভাললাগে তাহলে আমি বোকা,আর কারো খারাপ লাগলে আমি দুঃখিত।আমার সাথে ইহার কোন সম্পর্ক নাই(দয়া করে ভূল ব্যাখ্যা করেন না কেউ যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।))